পর্যটক আগমনে পৃথিবীর সেরা দশ শহর
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
১০। সাংহাই :সাংহাই চীনের দক্ষিণাংশের একটি প্রধান শহর। এটি চীনের সবচেয়ে জনবহুল শহরগুলির অন্যতম। Yangtze নদীর মুখ অবস্হান সাংহাই শহর , সাংহাই প্রতি বছর প্রায় 6.7 milion দর্শক ভ্রমন করে।বাঁধ এবং শহরের ঈশ্বরের মন্দির পর্যটক আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। মূলত সাংহাই কে চীনের বাণিজ্যিক রাজধানী বলা হয়।
৯) হংকং: হংকং বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল গণচীনের দুইটি বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের একটি। অপর অঞ্চলটি হল মাকাউ। ২৬০ টিরও বেশি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নিয়ে গঠিত এই অঞ্চলটি পার্ল রিভার ডেল্টার পূর্ব দিকে অবস্থিত। এর উত্তরে চীনের কুয়াংতুং প্রদেশ এবং পূর্ব, পশ্চিম আর দক্ষিণে দক্ষিণ চীন সাগর অবস্থিত। হংকং মুলত একটি দ্বীপ।। হংকং ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের একটি উপনিবেশ। এর পরে অবশ্য অনেক চড়াই উতরাই পার হতে হয়েছে। এটি পৃথিবীর অন্যতম আর্থিক কেন্দ্র , প্রায় ৭ মিলিয়ন পর্যটক হংকং ভ্রমন করে প্রতি বছর।
৮। ইস্তানবুলঃ তুরস্কের অন্যতম প্রধান শহর। এর পুরোনো নাম কন্সটান্টিনোপল। এছাড়া এটি বাইজান্টিয়াম নামে পরিচিত ছিল। এটি পূর্বে উস্মানীয় সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল। ১৪৫৩ সালে এটি তৎকালীন উস্মানীয় সাম্রাজ্যের রাজধানী হিসেবে ঘোষিত হয়। এটি তুরস্কের সংস্কৃতি এবং অর্থনীতির কেন্দ্রস্থল। ১৯২৩ সাল পর্যন্ত এখানেই ছিল তুরস্কের রাজধানী। এটি তুরস্কের বৃহত্তম শহর যার জনসংখ্যা ১২.৮ মিলিয়ন। অনেক ঐতিহ্যবাহী শহর। এই শহরটি দুটি মহাদেশকে বিভক্ত করেছে। মসজিদের নির্মাণশৈলী এবং গঠন আকর্ষনীয়। প্রতি বছর প্রায় ৭. ৫ মিলিয়ন পর্যটক এই শহরে ভ্রমন করে।
৭। দুবাইঃ মধ্যপ্রাচ্যের প্রাণকেন্দ্র বলা হয় দুবাইকে। উষর মরুভুমি সিক্ত করে বানানো হয়েছে দুবাই শহর। দুবাই আরব আমিরাতের সাতটি প্রদেশের মধ্যে একটি প্রদেশ। এটি পারস্য উপসাগরের দক্ষিণ তীরে আরব উপদ্বীপে অবস্হিত। ১৮৩৩ সাল থেকে দুবাই শাসন করে আসছে আল মাকতুম পারিবার। দুবাইয়ের বর্তমান শাসকের নাম মুহাম্মদ বিন রশীদ আল মাকতুম, পাশাপাশি তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী ও উপ-রাষ্ট্রপতির দায়িত্বও পালন করছেন। দুবাইয়ের প্রধান রাজস্ব আয় হচ্ছে পর্যটন ,রিয়েল এস্টেট এবং অর্থনৈতিক সেবা। দুবাইয়ের ৩৭ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস হতে রাজস্ব আসে ৬% এর ও কম।প্রতি বছর প্রায় ৭.৬ মিলিয়ন পর্যটক ভ্রমন করে দুবাই।
৬। নিউইয়র্কঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকুলের একটি অঙ্গরাজ্য। এই রাজ্যের রাজধানী অ্যালবানি এবং বৃহত্তম শহর নিউ ইয়র্ক সিটি। নিউ ইয়র্ক সিটি সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনবহুল শহর।এই শহরের লিবার্টি আইল্যান্ডে বিখ্যাত ষ্ট্যাচু অব লিবার্টি অবস্থিত। দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং, লিবার্টি এর মূর্তি, Ellis Island, Broadway থিয়েটার প্রোডাকসন্স, আর্ট মেট্রোপলিটান জাদুঘর , সেন্ট্রাল পার্ক,ওয়াশিংটন স্কোয়ার পার্ক, Rockefeller সেন্টার, টাইমস স্কয়ার ইত্যাদি অন্যতম। প্রতি বছর প্রায় ৮.৭ মিলিয়ন পর্যটক শহরটি ভ্রমন করে।
৫। কুয়ালালামপুরঃ মালয়েশিয়ার রাজধানী ও প্রধান শহর। অনেক পর্যটকের প্রিয় একটি শহর এটি। পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার পর্যটক আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু যা 1998-2004 সাল পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা ভবন বলে বিবেচিত হতো।কুয়ালালামপুর হল মালয়েশিয়ার সাংস্কৃতিক, আর্থিক ও অর্থনৈতিক সুতিকাগার। প্রায় ৮.৯ মিলিয়ন পর্যটকের পদচারনায় মুখরিত হয় কুয়ালালামপুর প্রতি বছর।
৪। সিঙ্গাপুরঃ সিঙ্গাপুর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া মহাদেশের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। দেশটি মালয় উপদ্বীপের নিকটে অবস্থিত। এর সরকারী নাম প্রজাতন্ত্রী সিঙ্গাপুর। সিঙ্গাপুর পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম অর্থনৈতিক ও পর্যটন কেন্দ্র।নানা দর্শনীয় স্থানে ভরপুর সিঙ্গাপুরে প্রতি বছর প্রায় ৯.৭ মিলিয়ন পর্যটক ভ্রমন করে।
৩। ব্যাংককঃ ব্যাংকক মহানগর থাইল্যান্ডের রাজধানী ও প্রধান শহর। ১৯৯০ খ্রীস্টাব্দের আদমশুমারী অনুসারে এর জনসংখ্যা ৮৫,৩৮,৬১০। শহরটি চাও ফ্রায়া নদীর পূর্ব তীরে থাইল্যান্ড উপসাগরের সন্নিকটে অবস্থিত। ব্যাংকক মধ্যে পর্যটক আকর্ষণের গ্র্যান্ড প্রাসাদ, Wat Pho এবং Wat অরুণ অন্তর্ভুক্ত। এখানকার খাবারের খ্যাতি দুনিরজোড়া। নাচ, গান ও নানা ঐতিহ্যে ভরা এই শহরে প্রতি বছর প্রায় ১০.২ মিলিয়ন পর্যটক ভ্রমন করে।
২। লন্ডনঃ যুক্তরাজ্যের রাজধানী এবং পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম শহর। এটি ইংল্যান্ডের টেম্স্ নদীর তীরে অবস্থিত। প্রায় ৭০ লক্ষ লকের বসতি এই লন্ডন সপ্তদশ শতক থেকেই ইউরোপে তার প্রথম স্থান বজায় রেখে আসছে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে এটিই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর। কারণ তখন বিশ্বের উল্লেখযোগ্য সকল স্থানই ছিল ব্রিটিশ রাজত্বের অধীন আর লন্ডন ছিল সেই রাজত্বের রাজকীয় ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র। বর্তমান যুগেও লন্ডন পৃথিবীর অন্যতম প্রধান অর্থ-বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে। দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে Trafalgar স্কয়ার, লন্ডন ব্রিজ, Covent গার্ডেন, লন্ডন আই, লন্ডন চিড়িয়াখানা, প্রাকৃতিক ইতিহাস জাদুঘর, গ্লোব থিয়েটার, চার্লস ডিকেন্স যাদুঘর এবং মাদাম তুসো. বিগ বেন। প্রতি বছর প্রায় ১৪ মিলিয়ন পর্যটক লন্ডনে আসে এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে।
১। প্যারিসঃ ফ্রান্সের রাজধানী। শহরটি উত্তর ফ্রান্সে ইল-দ্য-ফ্রঁস অঞ্চলের প্রাণকেন্দ্রে সেন নদীর তীরে অবস্থিত। প্রশাসনিক সীমানার ভেতরে প্যারিসের প্রাক্কলিত জনসংখ্যা ২,২১৫,১৯৭। দুই হাজার বছরেরও বেশি ঐতিহ্যের অধিকারী এই নগরী বিশ্বের অন্যতম বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। রাজনীতি, শিক্ষা, বিনোদন, গণমাধ্যম, ফ্যাশন, বিজ্ঞান ও শিল্পকলা — সব দিক থেকে প্যারিসের গুরুত্ব ও প্রভাব এটিকে অন্যতম বিশ্ব নগরীর মর্যাদা দিয়েছে। ইল্-দ্য-ফ্রঁস্ তথা প্যারিস অঞ্চল ফ্রান্সের অর্থনীতির কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র। শহরটিতে অনেক উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানসমূহের মধ্যে রয়েছে – আইফেল টাওয়ার, নোত্র্ দাম গির্জা, শঁজেলিজে সড়ক, আর্ক দ্য ত্রিয়োম্ফ, বাজিলিক দ্যু সক্রে ক্যর, লেজাভালিদ্, পন্তেওঁ, গ্রঁদ আর্শ, পালে গার্নিয়ে, ল্যুভ্র্, ম্যুজে দর্সে, ম্যুজে নাসিওনাল দার মোদের্ন ইত্যাদি। বিশ্বের সবচেয়ে বেশীসংখ্যক পর্যটকের গন্তব্যস্থল প্যারিস। প্রতি বছর প্রায় ১৪.৮ মিলিয়ন পর্যটক প্যারিস ভ্রমন করে।